রহমত নিউজ 31 August, 2024 10:54 PM
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া যেই ভিডিও দেখে গড়িয়ে পড়েছে মানুষের চোখের অশ্রুজল। ভ্যানে মানুষের নিথর দেহ স্তূপ করার সেই ভিডিওটি ছিল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কয়েকজন ব্যক্তির।
গতকাল শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি সামনে আসে। প্রথমে ঘটনাস্থল নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও, পরে একটি নির্বাচনী পোস্টারের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসে মূল ঘটনা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্মম এই ঘটনাটি ঘটেছে সাভারের আশুলিয়ায়। ভিডিওতে দেখা যাওয়া হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যদের একজন ঢাকা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনাটি ৫ আগস্ট বিকেলের।
ভিডিওতে দেখা যায়, ভ্যানের ওপর তোলা হচ্ছে একের পর এক মরদেহ, একটির ওপর আরেকটি রক্তাক্ত লাশ; মাথায় হেলমেট বুকে ভেস্ট পরিহিত কয়েকজন পুলিশ সদস্য ব্যস্ত এই কাজে। মরদেহগুলো ঢেকে দেওয়া হলো ময়লা চাদর আর রাস্তার পাশের ব্যানারে। চাদর আর ব্যানারের আড়াল থেকে দেখা যাচ্ছে হাত-পা-মাথা...।
পুলিশের এমন নিষ্ঠুর আচরণে হতভাগ হয়েছে দেশবাসী
প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান বলেন, সেদিন আমরা ভয়ংকর চিত্র দেখলাম। একপাশে আন্দোলনকারীরা অন্যপাশে পুলিশ। একপর্যায়ে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই কয়েকজন মারা যান। এরপর ছয়টি মরদেহ একটি ভ্যানে তোলে পুলিশ। কিছু সময় পরই সেসব মরদেহ পুলিশের গাড়িতে দেখা যায়। তখন মরদেহগুলোসহ সেই গাড়িটি আগুনে জ্বলছিল।
জানা গেছে, ভ্যানে মোট লাশের সংখ্যা ছিল ছয়টি। যার মধ্যে চারজনের পরিচয় মিলেছে। তারা হলেন- সাজ্জাদ হোসেন সজল, তানজিল আহমেদ সুজয়, বাইজিদ ও সবরু হুমায়ুন। বাকি দুজনের পরিচয় এখনো মেলাতে পারেনি পুলিশ।
অভিযোগ আছে, মরদেহগুলো পুলিশের গাড়িতেই পুড়েছে
আশুলিয়া থানা সংলগ্ন বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোফাজ্জল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে তারা মসজিদে আসেননি। তবে পরদিন সকালে পুড়ে যাওয়া ছয়টি লাশের জানাজা পড়ানো হয় সেখানে।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আজ সকালে ভিডিওটি দেখেছি। এটি এনালাইসিস করা হচ্ছে। আপনারা যেহেতু মিডিয়ায় কাজ করেন, কোনো তথ্য কিংবা সূত্র পেলে আমাদের সহযোগিতা করার অনুরোধ করছি।